“২০২১-এ মমতাকে নবান্ন ছাড়া করে তবে আমরা থামব”,বললেন তেজস্বী সূর্য

বিজেপির নবান্ন অভিযান কে কেন্দ্র করে বাংলার রাজনীতিতে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গ বিজেপির ক্ষোভের ‘আ’গু’নে ঘি ঢাললেন যুব মোর্চার কেন্দ্রীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য। রাজ্য পুলিশের সমালোচনা করার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে হুংকার দেন তিনি।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে “গু’ন্ডা” এবং দুর্নী’তিগ্রস্থ বলেও দাবি তার। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ যুবা তার মতন দুর্নী’তিগ্রস্ত নেতা কে অনুসরণ করে না।বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজেপির রাজ্য সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে এসে তেজস্বী সূর্য বলেন,”বাংলার রাজনীতির ইতিহাসের অন্যতম কালো দিন।

গণতন্ত্র ও সংবিধানকে প্রকাশ্য দিবালোকে খু-ন করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ভারতের সব থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার রয়েছে এই পশ্চিমবঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে। তাই আমি এখানে এসেছি। রাজ্যের সমস্ত জাতীয়তাবাদী যুবাকে আমি আশ্বস্ত করতে এসেছি, ভারতের সমস্ত যুবা আপনাদের পাশে একজোট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিজেদের একা ভাববেন না”।

বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিন বন্ধ করে রাখা হয়েছিল নবান্ন।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তের প্রতি নিন্দা জানিয়ে তেজস্বী সূর্য বলেন,”ল’ড়াইয়ের এই শুরু। মমতা দিদি যুবা মোর্চাকে ভয় পেয়েছেন। তাই নবান্নকে ২ দিনের জন্য বন্ধ রেখেছেন। এই ভয় ভালো। এই ভয় থেকে নতুন বাংলা ও নতুন ভারতের জন্ম হবে”।

আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় আসছে বলে মনে করেন তেজস্বী সূর্য। তিনি বলেন,”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁধার সরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার গঠিত হবে। নতুন সূর্যের উদয় হবে। আজকের রাজনৈতিক আন্দোলন গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। দেওয়াল লিখন স্পষ্ট। আগামী সরকার, বিজেপির সরকার”।

এরপরে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। তেজস্বী সূর্য পুলিশকে কটাক্ষ করে বলেন,”রাজ্যের পুলিশের আইনের শাসনে ভরসা নেই। তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুতুলে পরিণত হয়েছে।

তৃণমূলের গু:ন্ডারা তাদের ইচ্ছামতো নাচাচ্ছে। তাদের নির্দেশেই আমাদের কর্মীদের ওপর নির্মম – বর্বর আচরণ হয়েছে। আমাদের ১,০০০-এর বেশি কর্মী আহত হয়েছেন। ৫০০-র বেশি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে”।

বিজেপির কর্মী সমর্থকদের ওপর পুলিশি আ’ক্র’মণ এর প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে তেজস্বী সূর্য বলেন,”গত রাত থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ বাস, ট্রেন ও ফেরি পরিষেবা বন্ধ করে রেখেছে। এভাবে কি কোনও গণতান্ত্রিক সমাজ চলে? এদেশে কি কোনও রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার অধিকার নেই? মানুষ যাতে কর্মসূচিতে যোগ না দিতে পারে সেজন্য গোটা হাওড়া ব্রিজ আজ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। কয়েক জায়গায় পুলিশ বর্বরভাবে লাঠি চার্জ করেছে”।

এছাড়া জলকা’মান থেকে যে নীল রঙের রঙিন জল বিজেপি নেতৃত্ব দের ওপর সেটা না হয় সেই নিয়ে তদন্তের দাবি তোলেন তেজস্বী সূর্য। তিনি বলেন,”এদিন আমাদের কর্মীদের ওপর জলকামান থেকে যে জল ছেটানো হয়েছে তাতে গাঢ় নীল রঙের কোনও রাসায়নিক মেশানো ছিল।

গোটা পৃথিবীতে এত জায়গায় জলকামান থেকে জল ছেটানোর ছবি দেখেছি, কিন্তু কোথাও এমন রাসায়নিক দেখিনি। এই রাসায়নিক মেশানো জল গায়ে লাগলেই জ্বালা করছে, মানুষ বমি করছে। ওই জলে কী মেশানো হয়েছিল তা রাজ্য সরকারকে তদন্ত করে দেখার আবেদন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ, এর তদন্ত করুন। এভাবে মানুষের ওপর রাসায়নিক ছেটানো মানবাধিকারের নির্মম হ-”ত্যা”।

এছাড়াও যুবনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তীব্র কটাক্ষ করে তেজস্বী সূর্য বলেন,”পশ্চিমবঙ্গের যুবারা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন গু’ন্ডাকে অনুসরণ করবেন না। তাঁরা অনুসরণ করবেন স্বামী বিবেকানন্দের পদচিহ্ন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একজন পরিবারতন্ত্রের ধ্বজাধারী দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা।

আম বাঙালির দুঃখ – কষ্টে সমবেদনাহীন তিনি”। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরু’দ্ধে হুঁশিয়ারি দেন। বলেন,”আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে চাই। এটা ছিল আমার প্রথম আন্দোলন। আমরা ভবিষ্যতে এই লড়াই চালিয়ে যাব। পশ্চিমবঙ্গ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বৈ’রাচারী শাসন শেষ করে বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে”।