আগের বছরে আমফানের দুর্যোগের কথা আজও আমাদের মনে রয়েছে। অংকনের ক্ষতিকর প্রভাবে সারা পশ্চিমবঙ্গ হয়েছিল ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
বিশেষ করে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার গ্রামাঞ্চলে গুলিতে আজও গেলে দেখা যায় আমফানের থাবার ছোঁয়া। কিন্তু বিপদ কখনও একা আসে না,
বছর ঘুরতে না ঘুরতে চলে এলো “ইয়াশ”। গত মে মাসের শেষের দিকেই ইয়াস আছড়ে পড়লো পশ্চিমবঙ্গ এবং তার সংলগ্ন জেলাগুলিতে।
যদিও কলকাতার দিকে খুব একটি ছোঁয়া না পড়লেও পাথরপ্রতিমা নামখানা প্রভৃতি অংশগুলি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীর জলে ভেসে গেছে সংলগ্ন অঞ্চল গুলি।
বাড়ী ঘরদোর ভেঙ্গে মানুষ হয়ে পড়েছেন আশ্রয়হীন। এমনকি সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে চলে এসেছে নানা রকম বন্যপ্রাণী, অসহায় হয়ে আশ্রয় নিয়েছে মানুষের কাছেই।
এমনকি একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারকেও দেখা গেল একটি কুড়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে মানুষের কাছে আশ্রয় নিতে। ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহ তান্ডবে ছারখার হয়ে গেছে গ্রামাঞ্চল।
যদিও সরকার এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দের প্রচেষ্টায় কিছু ব্যবস্থা করা সম্ভব হলেও সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে।
এর মধ্যেই প্রবেশ করে গেছে পশ্চিমবঙ্গে মৌসুমী বায়ু। বেশ কয়েকদিন ধরে চলছে তুমুল বৃষ্টি। বিশেষ করে দক্ষিণ 24 পরগনা মুর্শিদাবাদ
প্রভৃতি জেলাগুলিতে বৃষ্টির ফলে অনেক জায়গায় জল জমে গেছে। টানা কয়েকদিন বৃষ্টির ফলে শহরাঞ্চল গুলিতে ছোট জায়গা হওয়ায়
ড্রেনেজ সিস্টেম ঠিকঠাক কাজ না করায় জল জমে প্রায় নদীর সৃষ্টি করেছে। এই জলের মধ্যে দিয়ে ভেসে যাচ্ছে অনেক নোংরা ও অন্যান্য ক্ষতিকর বস্তু,
কিন্তু মানুষকে বাধ্য হয়েই তার মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এর ফলে মানুষের সমস্ত রাগ উবছে পরছে শাসকদলের দিকে,
বিশেষ করে এত খারাপ অবস্থায় শাসকদলের এই নিষ্ক্রিয়তা ক্ষোভ তৈরি করেছে মানুষের মধ্যে। সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা গেল,
একটি অঞ্চলে বলিতে জল জমে প্রায় বন্যা পরিস্থিতির মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যেই এক ভদ্রলোক একটি বাক্সের মতো বস্তু তৈরি করে
তার গায়ে লাগিয়ে নিয়েছেন অনেকগুলি বোতল। প্রতিটি সেটে দুটি করে বোতল লাগিয়ে প্রায় ভেলার মত তৈরী করে নিয়েছেন তিনি।
এর মধ্যেই সেটিকে জলের মধ্যে দিয়ে নৌকার মতো দাঁড় টেনে টেনে এগিয়ে চলেছেন তিনি। আমরা এর মধ্যেই ফিজিক্সে আর্কিমিডিসের প্লবতার সূত্রটি জানি,
ভদ্রলোক বোতল গুলিকে পাশে বেঁধে জলের ভারসাম্য রক্ষার কাজ করছেন, যা প্লবতার সূত্র অনুযায়ী নৌকার মতো বাক্সটিকে ভাসিয়ে রেখেছে জলের উপর।
ব্যাপারটি যেমন হাস্যকর তেমনি অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত। ভদ্রলোকের এই অবস্থা দেখে দর্শক হেসে কুটিপাটি। কিন্তু এক দিক থেকে ভদ্রলোকের চিন্তাভাবনার সত্যি প্রশংসা করতে হয়,
এত খারাপ পরিস্থিতির মাঝেও তার এই অভিনব চিন্তাশক্তি কার্যকরী। অনেকেই তার এই নৌকাটিকে টাইটানিক এবং ওই নোংরা জলকে টেমস এর সাথে তুলনা করেছেন।
ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে সমিরন সেন নামে এক ব্যক্তির ফেসবুক প্রোফাইল থেকে। হাজার হাজার মানুষ ভিডিওটি লাইক করেছে।
ভদ্রলোকের অভিনব চিন্তাভাবনার প্রশংসা করেছেন অনেকেই। ভিডিওটি একদিকে মানুষকে যেমন হাসিয়েছে তেমনি মানুষকে প্রশংসা করতেও বাধ্য করেছে।
ভদ্রলোককে সাধুবাদ জানাই তার এই অভিনব চিন্তা ভাবনার জন্য। এইভাবে নানারকম হাস্যকর এবং শিক্ষামূলক ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আজকে আমরা সমস্ত পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পেরেছি। সোশ্যাল মিডিয়া এবং তার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জানাই কুর্নিশ।