চাকরি ছিলো না তাই ৫ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেছিলেন মাশরুম চাষ, এখন বার্ষিক উপার্জন ২৫ লাখ টাকা

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার হালত খারাপ। বেকারত্ব ঘরে ঘরে। লাখ লাখ যুবক উচ্চ শিক্ষার ডিগ্রি নিয়ে বসে রয়েছেন ঘরে।

তাদের শিক্ষা কোনো কাজেই লাগছে না। লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক যুবতী সম্মানজনক একটা কাজের জন্য বছরের পর বছর লড়াই করছেন।

পরীক্ষায় পাস করেও চাকরি পাচ্ছেন না অনেকে। কর্মহীনতার চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন কেউ কেউ।

মাস্টার্স পিএইচডি করা ছাত্র-ছাত্রীরা হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু বলে না! ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। চাকরির চেষ্টা ছেড়ে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করলেও উন্নতি পাওয়া যায়। আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষিত মানুষরা কৃষিকাজ করতে লজ্জা পায় কিন্তু। এই এগ্রিকালচারেই রয়েছে দেশের প্রাণ। লজ্জা ছেড়ে মাশরুম চাষ শুরু করে লাভের মুখ দেখে নজির গড়লেন বিহারের নওয়াদার বাসিন্দা মনোজ কুমার। ২০০৭ সাল থেকে তাঁর সংগ্রাম শুরু। তিনিও উচ্চশিক্ষার ডিগ্রী অর্জন করে বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। তখন‌ই তাঁর মাথায় আসে চাষাবাদের কথা। মাত্র ৭০০ টাকা রসদ নিয়ে কাজ শুরু করেন। শুরুর কয়েক বছর লাভের মুখ দেখেননি। কিন্তু তৃতীয় বছর থেকেই মাসে ২০০০০ টাকা রোজগার শুরু করেন। চাষে উন্নতি আনতে ডি এম আর সোলান থেকে মাশরুম চাষের নানারকম পদ্ধতির প্রশিক্ষণ নেন।

মাশরুমের জন্য সার, জমি তৈরি করা, কীটনাশক সব‌ই শিখে যান। বর্তমানে বাটন মাশরুম তৈরি করার জন্য দুটো বড় বড় এসি প্লান্ট তৈরি করছেন। তাঁর বার্ষিক আয় ২৫ লাখ টাকা। তাছাড়া ৫০০০ মানুষকে প্রশিক্ষণ‌ও দিচ্ছেন। দিল্লির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল সিবাল তাঁকে তাঁর এই কাজের জন্য সম্মানিত করেছেন। বর্তমানে বিভিন্ন সংস্থায় তিনি মাশরুম সরবরাহের কাজ করে থাকেন। কাঁচা ও শুকনো দুইভাবেই মাশরুম বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন ২০০ কেজি মাশরুম পাওয়া যাচ্ছে এই খামার থেকে। প্রসঙ্গত, মাশরুম ভিটামিন বি, ডি, পটাশিয়াম, কপার, আয়রন এবং সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ। এছাড়া মাশরুমে কোলিন নামক একটি বিশেষ পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়, যা পেশীর সক্রিয়তা ও স্মৃতিশক্তি বজায় রাখতে খুবই উপকারী। মাশরুম অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। এর মধ্যে বিশেষ হল এরগোথিওনিন, যা বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে এবং ওজন কমাতে সহায়ক। মাশরুমের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরে এর ক্রেতাও দিনপ্রতি বেড়েই চলেছে।