“মাটির দিকে তাকিয়ে চলতে হবে”, তৃণমূল প্রার্থীদের বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা পুরভোটের আগে কাউন্সিলরদের কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঘাযতীনে সভা শেষে বেহালায় ভোট প্রচারে গিয়েছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “কাউন্সিলররাও মানুষ। ঠিক কথা। তাঁদের খাওয়া কিংবা ঘুমানোর সময় দিতে হবে।

কিন্তু, কাজের সময় কাজও করতে হবে। অনেককে দেখি, গাড়িতে চড়ে ঘুমাতে ঘুমাতে যান। সেটা করলে হবে না। আমি যখন গাড়িতে থাকি, তখন সব দেখতে দেখতে যাই। বাকিদেরও সেটা করতে হবে।” নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে এদিন মুখ্য মন্ত্রী আরো বলেন, “সকাল ন’টা থেকে রাত ১০টা অবধি ফোন চালু রাখতে হবে। আমাকে দিনে চারশো ফোনের উত্তর দিতে হয়।

প্রত্যেককে মাটির দিকে তাকিয়ে চলতে হবে। নিউ আলিপুর, তারাতলায় জল জমেছিল। আমি গালিগালাজ করতে করতে গিয়েছি। ববিকে ফোন করে বলেছি, কেন জল জমল? লাইট খারাপ হলেও ফোন করি। আমার কাজ নয় এটা। তবু করি। আমি তাকিয়ে তাকিয়ে গেলে, আপনাদেরও তাকাতে হবে। চোখ-কান চালাতে হবে। কাজের সময় কাজ করতে হবে। কোন কাজ হচ্ছে সেটাও দেখতে হবে”।

বেহালার মাটিতে দাঁড়িয়ে এদিন আবেগপ্রবণ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে কোনও বড় অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে আমি বেহালার মাটি ছুঁয়ে যাই। যাতে আপনারা আমাকে না ভোলেন। আমিও আপনাদের ভুলিনি, সেই কথাও বারবার মনে করিয়ে দিই। বেহালায় আমার রাজনৈতিক হাতেখড়ি।

জগৎপুর থেকে যখন দাঁড়িয়েছিলাম, তখনও আপনারা আমার পাশে ছিলেন। দক্ষিণ কলকাতাতে দাঁড়ানোর সময়ও আপনারা আমার সঙ্গে ছিলেন”। বামফ্রন্ট আমলের কথা উল্লেখ করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বামফ্রন্ট সরকারের আমলে বেহালার অবস্থা দেখে দুঃখ লাগত। তখন থেকেই ভাবতাম, কী ভাবে বেহালার উন্নয়ন করা যায়। আজ কে ফিতে কাটবে জানি না।

কিন্তু, বলতে দ্বিধা নেই যে বেহালার মেট্রো রেলের সব ব্যবস্থা করে গিয়েছিলাম। টাকা, জমি সবই দিয়েছিলাম। কোথায় কোন স্টপেজ হবে, তার নাম কী হবে দিয়েছিলাম। তারাতলা, জোকা, মাঝেরহাট সব স্টেশনের পরিকল্পনা করেছিলাম। মেট্রোয় উঠবেন জোকা থেকে ১০ মিনিটে পৌঁছে যাবেন দক্ষিণেশ্বর”।

তিনি আরও জানান, “আমি যদি রেলমন্ত্রীর পদ ছেড়ে বাংলার দায়িত্ব না নিতাম, তাহলে দু’ বছরের মধ্যে মেট্রোর কাজ শেষ করতাম। ওঁরা দেরি করেছে। আপনাদেরও কষ্ট করতে হয়েছে জানি। মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়েছিল কিছুদিন আগেই। ওই ব্রিজ পুরনো। আগের সরকার দেখভাল করেনি।

মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার সময় দার্জিলিং থেকে ছুটে এসেছিলাম। যত দ্রুুত সম্ভব, তত দ্রুত কাজ করেছি। আমরা কিন্তু কোনও দেরি করিনি। রেল দেরি করেছে। অনেক কষ্ট হয়েছে। নতুন ব্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। এতে মানুষের সুবিধা হবে”।