ঘরে অসুস্থ বাবা, পেটের দায়ে সংসার চালাতে রিকশা চালাচ্ছেন যুবতী, ভিডিও ভাইরাল

প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মানুষের করুন কাহিনীর বিবরণ আমরা দেখতে পাই। অসহায়তার মধ্যেও সংগ্রাম করে জীবন যুদ্ধে জয়লাভ করতে হবে। জীবন ধারন করতে গেলে কোন কাজই ছোট নয়। এবার এক যুবতী রিক্সা টেনে সংসার খরচ চালাতে বাধ্য হলেন। ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের ঢাকায়।

নিজের রিক্সা নয়, অন্যের রিকশা চালিয়ে ইনকাম করতে হয়েছে তাকে। মা থাকেন বাড়িতে। দুর্ভাগ্যবশত তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। কোন কাজ করতে পারেন না। বাড়িতে রয়েছে আরো তিনটে ছোট ছোট বোন আর এক ভাই। মানুষের মতো মানুষ করতে হবে তাদের। বাবা নেই।

থেকেও যেন তিনি পরিবার পরিজন ছেড়ে বছর তিনেক আগে চলে গিয়েছেন অন্য কোথাও। চলে যাওয়ার পরে এক হাজার টাকা করে পাঠালেও বর্তমানে তিনি আর সংসদের খবর রাখেন না। তাই বাধ্য হয়ে বাড়ীর বড় মেয়ে রিকশা চালানোর কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন।

শিক্ষাগত যোগ্যতা বলতে কিছু নেই। তাই সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করাও সম্ভব নয়। অন্য কোথাও চাকরির খোঁজে গেলেও শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার কারণে ফিরে আসতে হয় তাকে। অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে গেলেও সকলে বিশ্বাস করে কাজে নেয় না। তাই নিরুপায় হয়ে পড়েছে এই যুবতী।

ওই যুবতী জানিয়েছেন প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে তার ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা রোজগার হয়। যেন তেন প্রকারে অনেক কষ্ট করে এই টাকার মধ্যেই জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তাকে। সকাল আটটায় রিকশা চালাতে বেরিয়ে গিয়ে রাত আটটার সময় বাড়ি ঢুকতে হয় তাকে।

ওই যুবতী জানান, কাজ করে খেলে সকলেই খারাপ বলবে। কিন্তু খারাপ কাজ করলে সকলেই ভালো বলবে। ঠিক সেই কারণেই কে কি বললো সেই বিষয়ে ভাবতে নারাজ ওই যুবতী। বয়স একটু বেশি হলেও বিয়ে করতে চাইছেন না ওই যুবতী। কারণ বিয়ে যে করবে সে নিজের স্বার্থে করবে। বিয়ের পর মা আর ভাই বোনেদের

খোঁজখবর কেউ রাখবে কিনা সে সম্পর্কে নিরাশ তিনি। আগে ভাই-বোনকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখিয়ে, ভালো করে পড়াশোনা শিখিয়ে, মানুষের মত মানুষ তৈরি করার পরেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই যুবতী। “বাংলার মুখ” নামক একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশিত হয়েছে এই অসহায় বাংলাদেশি যুবতীর করুন কাহিনী।

একটি রিক্সা চালিয়ে কোন রকমের জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। ইতিমধ্যেই এই ভিডিওটি ৩ মিলিয়ন দর্শক দেখে নিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রায় ২৭ হাজার লাইক পড়েছে ভিডিওটিতে।