



সড়কের মোড়ের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে, বাড়ির প্রাচীরে কিংবা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের গাছে কত রকম চটকদার বিজ্ঞাপনই না চোখে পড়ে।




কিছু জ্যোতিষ, কিছু পন্য বিক্রির। কোনো কোনো বিজ্ঞাপন মনে থাকে, কোনোটি আবার মনে থাকেনা। কিন্তু সম্প্রতি যে বিজ্ঞাপনটি নেটপাড়া,




তোলপাড় করে দিচ্ছে, তা একবার দেখে ভোলা মুশকিল। বিজ্ঞাপনে লেখা হয়েছে, টিউশনি চাই। “দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই”,
বিজ্ঞাপনটি দিয়েছেন আলমগীর কবির নামক এক ব্যক্তি। বাংলাদেশী এই যুবক পেশায় বেকার। বগুরার জহুরুলনগরের আশেপাশে তিনি পড়াতে চান। প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী অব্দি অঙ্ক ব্যতীত যেকোনো বিষয় পড়াবেন তিনি। ভাতের বিনিময়ে পড়ানোর কথা পড়ে এসেছি রবি ঠাকুরের বইয়ে। বাঁশি কবিতার সেই নায়ক খেতে পেতেন দত্ত বাড়িতে পড়িয়ে। এযুগেও যে এমন হতে পারে তা সত্যিই কল্পনার অতীত বলা চলে। আলমগীরের এই বিজ্ঞাপন পড়ে তাঁর সাথে যোগাযোগ করেছে বহুজন। সেই সুত্রেই খবর মিলেছে, শৈশব থেকে অভাবের সঙ্গে লড়াই সংগ্রাম করছেন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বগুড়ায় এসে পড়াশোনা করেছেন। পাঁচ বছর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
মেধাতালিকায় দেশসেরা আলমগীর স্নাতকোত্তর পরীক্ষার ফলাফলেও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। পড়াশোনা শেষে হন্যে হয়ে একটা ভালো চাকরি খুঁজেছেন, কিন্তু পাননি। এখন অন্যের বাসায় জায়গির হিসেবে কোনোরকমে মাথা গোঁজার ব্যবস্থা হয়েছে। সন্ধ্যায় একটি বাসায় ছাত্র পড়ানোর বিনিময়ে রাতের খাবার খান। খাবার খরচ জোগাতে না পারায় সাত মাস ধরে অন্য দুবেলা অনাহারে কাটাচ্ছেন। করোনাকালে সমস্ত টিউশনি চলে যাওয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন দুপুর ও সকালের খাবার খাওয়ার বিনিময়ে পড়ানোর। আলমগীর কি পেয়েছে তার ছাত্রকে? কি জানি…