



দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার হালত খারাপ। বেকারত্ব ঘরে ঘরে। লাখ লাখ যুবক উচ্চ শিক্ষার ডিগ্রি নিয়ে বসে রয়েছেন ঘরে।




তাদের শিক্ষা কোনো কাজেই লাগছে না। লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক যুবতী সম্মানজনক একটা কাজের জন্য বছরের পর বছর লড়াই করছেন।




পরীক্ষায় পাস করেও চাকরি পাচ্ছেন না অনেকে। কর্মহীনতার চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন কেউ কেউ।
মাস্টার্স পিএইচডি করা ছাত্র-ছাত্রীরা হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উচ্চ শিক্ষিত ছেলেরা চপ ভাজছে, টোটো চালাচ্ছে। এর থেকে হৃদয়বিদারক আজকের খবরে আর কিছুই নয়। কোনো পেশাকে ছোটো না করেই বলা হচ্ছে বিএসসি পাশ এক যুবতী এবার রাস্তার রাস্তায় ঘুরে দইবড়া বিক্রি করে। সাইকেলের কেরিয়ারে ক্যান বসিয়ে বিক্রি করে সে। মেয়েটির নাম সুনিতা চৌধুরী। বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুরের বাসিন্দা, বছর চৌত্রিশের সুনীতা বি.এস.সি পাশ শুধু নয়, সে একজন মা ও। উদয়চাঁদ মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পরে রাঁচিতে বিয়ে হয়। কিন্তু সংসার সুখের হয়নি। গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়ে ফিরে এসেছেন ন বছরের মেয়েকে নিয়ে। চাকরির চেষ্টা করেও মেলেনি। তাই নিজে হাতে দইবড়া বানিয়ে সাইকেল সম্বল করে বেড়িয়ে পড়েছেন রাস্তায়।
ঘরোয়া স্বাদের দইবড়া খেতছ ভিড়ও হচ্ছে প্রচুর। তিনি বলেন, “সমাজের দিকে চেয়ে বসে থাকলে আমার চলবে না। আমার সঙ্গে ছোট্ট মেয়ে আছে। তার ভবিষ্যৎ আছে। তাই আমার লড়াইটা আমাকে একাই লড়তে হবে।” তাঁর কথায়, “বাড়িতে মেয়ে আছে। মেয়ের লেখাপড়া আছে। এখন আমিই ওর মা, আমিই ওর বাবা। ওর কথা ভেবেই আমার এই পথচলা। বহু মানুষ আমার থেকে দইবড়া খেয়ে যান। তারা আবার তার বন্ধুদের নিয়ে আসেন। কেউ আবার খাওয়ার পর তা বাড়িতেও নিয়ে যান। এমনও ক্রেতা আছেন যাঁরা রোজ এসে খেয়ে যান। এতে সারাদিন যা উপার্জন হয় তাতে আমার আর মেয়ের দিন চলে যায়। আগে টাউন হলে টেবিল নিয়ে বসতাম। তারপর আমি নিজেই এই সাইকেলের ব্যবস্থা করি। এখন সাইকেল নিয়েই ঘুরে ঘুরে মানুষকে দইবড়া খাওয়াই।” সত্যিই! সুনিতার লড়াইকে কুর্নিশ।