বহু অপেক্ষার পর রিলিজ হল চা বিক্রেতা গৃহবধূর গান, ব্যাপক ভাইরাল ভিডিও

কথাই বলে, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। তারই এক অনন্য উজ্জল উদাহরণ হল নদীয়া জেলার চাকদহের বাসিন্দা বিপাশা দাস। তিনি চায়ের দোকান চালিয়ে সংসার চালিয়ে থাকেন। তার গলাতেই যেনো স্বয়ং মা স্বরসতীর বাস। চায়ের দোকান চালিয়ে সংসার করা এই মহিলার কন্ঠ বেশ খানিকটা লতা মঙ্গেশকরের মত।

এটা ঠিক তিনি চায়ের দোকান চালিয়ে সংসার চালান। কিন্তু তার গানের গলাও একেবারে অসাধারণ। ছোটো থেকেই অভাবের সংসারে মানুষ হয়েছেন বিপাশা দাস। শিশুকাল থেকেই গানের প্রতি আগ্রহ থাকা সত্বেও গান শিখতে পারেননি কোনভাবেই।

কারণ পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে গান বাজানো শেখা হয়ে ওঠেনি চাকদহের বিপাশা দাসের। মেয়েকে গান শেখাতে না পারার দুঃখ থেকে গিয়েছিলো বিপাশার বাবার মনে। তবে কপালগুণে বিপাশা দাসের বিয়ে হয়েছিল জনৈক খোল বাদকের সঙ্গে। আর তাতেই হলো মুশকিল আসান।

বড়োসড়ো কোনো গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে না পারলেও, অবসর সময়ে স্বামীর সঙ্গে গান-বাজনায় মেতে উঠতেন বিপাশা। স্বামীর তেমন উপার্জন নেই। মাঝে মাঝে খোল বাজানোর ডাক আসে। তা থেকে যৌথ কার্যালয় তাতেই সংসার চালানো সম্ভব নয়।

তাইসংসার খরচ জোগানো বলতে একমাত্র চায়ের দোকান। কিন্তু লকডাউনের কারণে তাতেও বেচাকেনা বেশ খানিকটা কম। বর্ষায় ভাঙ্গা টালির চাল চুঁইয়ে জল পড়ে বিপাশা দাসের ঘরে। কোনদিনই গান শেখেননি বিপাশা দাস। তবে ঈশ্বর প্রদত্ত সুরেলা কন্ঠে,

তিনি যখন গান গেয়ে ওঠেন তখনই যেন বোঝা যায় বিপাশা দাসের কন্ঠে মা স্বরসতীর বাস। নদিয়ার চাকদহের গোসাই পাড়ার বাসিন্দা বিপাশা দাস। কোনোদিনও তথাকথিত গানের তালিম না থাকা সত্ত্বেও বিপাশা দাসের কন্ঠে মুগ্ধ হন সোশ্যাল ওয়ার্কার অতীন্দ্র চক্রবর্তী।

কোন একদিন তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন নদীয়া চাকদহ বিপাশা দাসের চায়ের দোকানে। সেখানেই বিপাশা দাসের গান শুনে আপ্লুত হন অতীন্দ্র চক্রবর্তী। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ক্যামেরায় রেকর্ড করে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে পোস্ট করেন অতীন্দ্র।

মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় বিপাশা দাসের গান। তবে এবার অতীন্দ্র চক্রবর্তীর ট্যালেন্টহান্ট প্রতিযোগিতায় গান গাইলেন বিপাশা দাস। কোন একটি ঘরের মধ্যে এবার গান গাইতে দেখা গেল বিপাশা দাসকে। “হামে অর জিনেকি” গানটি গে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিলেন বিপাশা দাস।

কয়েকদিন আগেই চলে গিয়েছিল যে, বিপাশা দাস রেকর্ডিং স্টুডিও পৌঁছে গিয়েছেন তার নতুন গান রেকর্ডিং এর জন্য। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতে পেয়েছিলাম, আর কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো তার নতুন গান মুক্তি পাবে তারই অপেক্ষায় মানুষ।

অতীন্দ্র চক্রবর্তীর আসলে এমন একজন মানুষ যিনি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিভা খুঁজে বেড়ান।একসময় অতীন্দ্র চক্রবর্তীর হাত ধরে রানাঘাটের রানু মন্ডল পৌঁছে গিয়েছিলেন মুম্বাইয়ের বলিউডের স্টুডিওতে। গান গেয়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী হিমেশ রেশমিয়ার সঙ্গে।

যদিও নিজের অতিরিক্ত অহংকারের কারণে আজ তিনি আর সেরকম কোনো কাজ পান না। তবে সাধ্যমত চেষ্টা করে গিয়েছিলেন অতীন্দ্র চক্রবর্তী। এবার বিপাশা দাসের ক্ষেত্রেও তিনি উঠে পড়ে লেগেছেন তাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।

খানিকক্ষণ আগে পোস্ট করা অতীন্দ্র চক্রবর্তীর এই ভিডিও এখন হাজারখানেক দর্শক দেখে নিয়েছেন। তার সাথে রয়েছে প্রচুর সংখ্যক লাইক আর কমেন্ট। কমেন্ট সেকশনে সকলের বিপাশা দাসের কন্ঠের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন।